ওয়েব হোস্টিং | কেন আপনার ওয়েবসাইটের জন্য সস্তা ওয়েব হোস্টিং সেবা এড়িয়ে চলবেন

আমরা যখন একটি ওয়েব হোস্টিং কোম্পানি নির্বাচন করি, আমরা সব সময় নিজেদেরকে একটি প্রশ্ন করি – আমি কি তাদের কাছে আমার ওয়েবসাইট টি  হোস্ট করতে পারি?

আপনার ওয়েবসাইটের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে কোথায় আপনার সাইট টি  হোস্ট করবেন? যখন আপনার সাইট এর ট্রাফিক বৃদ্ধি পাবে, তখন আপনার  হোস্টিং আপগ্রেড করতে হবে. কিন্তু এটা শুধু ট্রাফিক ফ্যাক্টর দ্বারা বিবেচনা করা হয় না। আমাদের পছন্দ নির্ভর করে অনেক গুলো ফ্যাক্টরের উপর। হোস্ট এর স্টোরেজ, ব্যান্ডউইথ, গড় আপটাইম, গতি এবং সমর্থিত সফ্টওয়্যার, কারিগরি দক্ষতা, এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে খরচ ও সেবার মান।

খরচ ফ্যাক্টরঃ

যাদের ওয়েব হোস্টিং সম্পর্কে অভিজ্ঞতা কম তারা কিছু কমন প্রশ্নই বার বার করে থাকেঃ

কত টাকা খরচ হবে? এত টাকা কেন খরচ হবে?

ধীরে ধীরে তারা যখন কিছু বিষয় সম্পর্কে অবগত হয় তখন এই প্রশ্নের হার কমতে থাকে। তখন তারা বুঝতে পারে যে আসলে খরচ টা কিসের উপর নির্ভর করে।

কিভাবে???

উত্তর টা খুব ই সহজ। যখন আপনি ধীরে ধীরে ওয়েব হোস্টিং সংক্রান্ত ব্যাপারগুলো  বুঝতে শুরু করবেন তখন দেখবেন অনেক গুলো ফ্যাক্টর রয়েছে এর পিছনে যেমনঃ স্বয়ংক্রিয় কোর আপডেট, ডিডস সুরক্ষা, ম্যানেজড হোস্টিং, ইন্টিগ্রেটেড সিডিএন এবং অন্যান্য ব্যাপার যেগুলোর কারনে আপনি সুন্দর একটি হোস্টিং পরিবেশ পাচ্ছেন।

সস্তা ওয়েব হোস্টিং সমস্যাঃ

কেন সস্তা হোস্টিং সেবা গ্রহন করা থেকে বিরত থাকবেন সে সম্পর্কে কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

এখানে যে বিষয় গুলো রয়েছে তার অধিকাংশই পরস্পর সম্পর্কিত।

একটা ভুল আরেকটা সঠিক কাজকে নতুন ভুলের দিকে প্রভাবিত করে। যদি আপনি ব্যবসায়িক দিক থেকে চিন্তা করেন – সহজ লাভ/ক্ষতি সমীকরণ, দেখবেন যে বিষয়গুলো খুবই স্পর্শকাতর। চলুন শুরু করা যাক।

 ১. রিসোর্সের চরম সীমাবদ্ধতাঃ

সস্তা ওয়েব হোস্ট সাধারণত একই সার্ভারের মধ্যে যতটা সম্ভব অনেক বেশি ওয়েবসাইট হোস্ট করে। ফলস্বরূপ, একটা ডেডিকেটেড সার্ভারের সীমিত রিসোর্স প্রতিটি ব্যবহারকারীর মধ্যে ভাগ করার কারনে রিসোর্স লিমিট মারাত্মকভাবে কমে যায়।  উদাহরণস্বরূপ, ৮ জিবি RAM এর একটি সার্ভার বিবেচনা করলে এবং সেটা ২00 জন ব্যবহারকারীর জন্য ব্যবহার করা হলে প্রতিটি ব্যবহারকারী RAM- এর প্রায় ৪0 মেগাবাইট পাবেন. (৮ X ১০০০/২০০). যা বেশ ভাল সেবা দিয়ে থাকবে। কিন্তু এর থেকে বেশি ব্যবহারকারী হলেই সমস্যার সৃষ্টি হবে।

২. স্টোরেজ প্রহেলিকাঃ

সার্ভারের হার্ড ডিস্ক অন্যান্য উপকরনের এর তুলনায় বেশি ব্যয়বহুল। এর কারন উন্নত নির্ভরযোগ্যতা, দ্রুত কর্মক্ষমতা, অধিক ব্যবহারের উপযোগিতা। কিন্তু একটা নির্দিষ্ট সময় পরে এর কর্মক্ষমতা মারাত্মকভাবে হ্রাস  পায় এবং সেবার মান ও খারাপ হয়ে যায়। সস্তা হোস্টিং এর ক্ষেত্রে সেটা আর বেশী প্রভাব ফেলে কারন তারা ধারনক্ষমতার তুলনায় অধিক সংখ্যক ওয়েবসাইট সেখানে হোস্ট করে। ফলে কম ক্ষমতাসম্পন্ন সার্ভার থেকে বাজে সেবা পাওয়া যায়।

৩. সামান্য অথবা একদম ব্যাক-আপ না রাখাঃ

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নতুন ব্যবহারকারী ব্যাক-আপ রাখার গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারে না, যা এটা একটি ভাল হোস্টিং কোম্পানী নিয়মিত দায়িত্বের সাথে করে থাকে।   ভাল হোস্টিং কোম্পানী গুলো নিয়মিত ব্যাক-আপ রাখে এবং কমপক্ষে ৩০ দিনের ব্যাক-আপ তারা সংরক্ষন করে থাকে।  একটি সস্তা ওয়েব হোস্ট এর পক্ষে নিয়মিত ব্যাক-আপ রাখার সম্ভাবনা বেশ ক্ষীণ। এমনকি যদি যদি ব্যাক-আপ রেখেও থাকে, সেটা পরিপূর্ণ ভাবে সংরক্ষণ করে না বা করতে পারে না। উপরন্তু বোনাস হিসাবে, তারা আপনার ব্যাকআপ রিস্টোর করার জন্য আপনাকে চার্জ করতে পারে!

৪. অনভিজ্ঞ সাপোর্টঃ

প্রথমত, আপনি একটি টিকেট ওপেন করলে তার জবাব পেতে যথেষ্ট সময় লাগে। ধরুন বেশ কিছু সময় নিয়ে তারা আপনার টিকেট এর জবাব দিলেও, মোটামুটি সহজ হোস্টিং বিষয়ক কোন সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম নাও হতে পারে।

৫. সস্তা হোস্টিং ওভারইউজ নোটিশঃ

কখনও কখনও আপনার ওয়েবসাইট ট্রাফিক স্পাইক পেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, আপনার লিঙ্ক যদি কোন ব্যক্তি বিখ্যাত দ্বারা টুইট করা হয়, বা এটা Reddit এ জনপ্রিয়তা পায়, তাহলে কোন সাধারন হোস্টিং এর চাপ সামলাতে ব্যর্থ হবে এবং লগ এ ওভারইউজ হিসেবে দেখাবে।  সস্তা ওয়েব হোস্টিং সেবা গুলো এমন ভাবে দেয়া হয় যে হঠাৎ করে ট্র্যাফিক বেড়ে গেলেই রিসোর্স ওভারইউজ নোটিশ দেখাবে।

৬. নিরাপত্তার ঝুকিঃ

নতুন বা অনভিজ্ঞদের কাছে নিরাপত্তা খুব একটা গুরুত্ব পায় না। তারা এটাকে খালি চোখে দেখতে পায় না। সস্তা ওয়েব হোস্টিং কোম্পানি গুলো থেকে সেবা নিলে আপনার ওয়েবসাইট সর্বদা নিরাপত্তা ঝুঁকিতে থাকবে। বেসিক ফায়ারওয়াল, ম্যালওয়্যার সুরক্ষার অভাব এবং ডিডস আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রায় শূন্য সুরক্ষা আপনার ওয়েবসাইটকে চরম হুমকির মুখে ফেলতে পারে। ফলে আপনার সাইটটি একটি বাচ্চা হ্যাকারের জন্য খেলার মাঠ হয়ে যাবে।

৭. লুকানো খরচঃ 

যে পণ্য বা পরিষেবা বিনামূল্যে হওয়া উচিত তার জন্য একটি কোম্পানি যখন চার্জ করে, আমরা তাকে লুকানো খরচ বলতে পারি। সস্তা ওয়েব হোস্টিং কোম্পানি গুলো এ ধরনের টুইস্ট এ পরিপূর্ণ থাকে।

যেমনঃ

ক) ব্যাক-আপ রিস্টোর করা।

খ) ডোমেইন ট্রান্সফার (এটা খুব বেশী পরিমাণে দেখা যায়)।

গ) বিশেষ সেবার জন্য টিকেট ওপেন করা।

ঘ) রিসোর্স অতিরিক্ত ব্যবহারের ঘটনা।

ঙ) কন্ট্রোল প্যানেল এর যে কোন ব্যাপারে সাহায্য চাওয়া।

ধরুন, $১ দিয়ে আপনি একটা ভিপিএস নিলেন আর সেটার জন্য টিকেট ওপেন করতে তারা আপনাকে $৫ চার্জ করল। ব্যাপারটা কেমন লাগবে? সত্যিই হাস্যকর, তাই না? কিন্তু অহরহ এমন টা হচ্ছে।

 উপসংহারঃ 

সস্তা হোস্টিং কোম্পানিগুলো আপনাকে ধ্বংস ছাড়া আর কিছুই করতে পারে না। অল্প কিছু টাকা বাঁচাতে গিয়ে আপনি নিজেই আপনার মূল্যবান পরিকল্পনা ও সময় নষ্ট করছেন।

কথা হচ্ছে, জিনিস যেটা ভাল, দাম তার একটু বেশী।

ভাল থাকুক আপনার ওয়েবসাইট।

Share your love
Saief Mahmud
Saief Mahmud

Saief is the founder and CEO of VernalWeb, a fast growing web hosting company. Saief is a digital marketing enthusiast. He's on a valiant quest to discover effective marketing strategies then share those secrets with VernalWeb users.

Articles: 65

2 Comments

  1. Support is the most important part of any hosting company. I always check the support capability, problem-solving time and skill before i select my hosting provider. BTW, Thanks for writing about it.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *